জিংক বি ট্যাবলেট খেলে কি মোটা হয় বিস্তারিত তথ্য জানুন

প্রিয় বন্ধুরা, আপনারা হয়তো অনেকেই জিংক বি ট্যাবলেট খেলে কি মোটা হয় এ সম্পর্কে ভালোমতো জানেন না। তাদের কথা চিন্তা করে আমরা আজকের এই আর্টিকেলটিতে জিংক বি ট্যাবলেট খেলে কি মোটা হয় ও জিংক ট্যাবলেট খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করার চেষ্টা করব।
জিংক বি ট্যাবলেট খেলে কি মোটা হয়
পোস্টসূচীপত্রঃআপনারা যদি জিংক বি ট্যাবলেট খাওয়ার উপকারিতা ও জিংক বি ট্যাবলেট খেলে কি মোটা হয় এ সম্পর্কিত বিস্তারিত তথ্য জানতে চান তাহলে অবশ্যই পোস্টটি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত মনোযোগ সহকারে পড়ুন।

ভূমিকা

আমরা হয়তো অনেকেই জিংক বি ট্যাবলেট খেয়ে থাকে কিন্তু এর উপকারিতা গুলো ভালোমতো জানিনা। তাদের জন্য আমরা উপকারিতা গুলো আলোচনা করব। তাছাড়া অনেকে মনে করে থাকে জিংক বি ট্যাবলেট খেলে কি মোটা হওয়া যায়। এ সম্পর্কেও আমরা আজকের আর্টিকেলটিতে গুরুত্ব সহকারে আলোচনা করব। জিংক ট্যাবলেট আমাদের দেহের বিভিন্ন ধরনের উপকারিতা দিয়ে থাকে। বিশেষ করে শরীরের জিংকের ঘাটতি পূরণ করতে এটি ভালো কাজ করে। যাদের শরীরে জিংকের ঘাটতি রয়েছে তারা জিংক ট্যাবলেট নিয়মিত খেতে পারেন।  
জিংক বি ট্যাবলেট খাওয়ার আগে অবশ্যই জিংক ট্যাবলেট সম্পর্কে ভালোভাবে জেনে নিতে হবে। এর জন্য আপনাদের জানার সুবিধার্থে আমরা আজকের পোস্টটিতে জিংক বি ট্যাবলেট এর দাম কত ,জিংক বি ট্যাবলেট খাওয়ার নিয়ম,জিংক ট্যাবলেট খাওয়ার উপকারিতা,জিংক ট্যাবলেট খেলে কি হয় ইত্যাদি বিষয়গুলো সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হবে। তাই জিংক বি ট্যাবলেট সম্পর্কিত বিস্তারিত জানতে পোস্টটি শুরু থেকে পড়ুন।

জিংক বি ট্যাবলেট খেলে কি মোটা হয়

আপনাদের মধ্যে অনেকে আছে যারা প্রশ্ন করে থাকেন জিংক বি ট্যাবলেট খেলে কি মোটা হয়। তাদের উত্তরে বলব জিংক বি ট্যাবলেট খেলে মোটা হওয়া যায় না। এই ট্যাবলেটটি কোন মোটা হওয়া বা ওজন বৃদ্ধির ঔষধ নয়। তাই এই ট্যাবলেট খেলে শরীরের ওজন বাড়ানো অথবা মোটা হওয়া যায় না। এই ট্যাবলেট খাওয়ার ফলে শুধুমাত্র শরীরের ভিটামিন বি ও জিংকের ঘাটতি পূরণ হয়। তবে অনেক জায়গায় লেখা রয়েছে এই ট্যাবলেট খেলে শরীর ওজন বাড়ানো যায়।
কিন্তু এ বিষয়ে কোন সত্যতা পাওয়া যায়নি। যেহেতু এই ট্যাবলেটটি ওজন বৃদ্ধির ওষুধ নয় সুতরাং এটি খেলে মোটা হওয়া যায় না এবং ওজন বাড়ানো যায় না।শরীর মোটা করা অথবা ওজন বাড়ানোর জন্য বিভিন্ন ধরনের ওষুধ পাওয়া যায় সেগুলো আপনারা খেতে পারেন। তবে জিংক বি ট্যাবলেট শুধুমাত্র ভিটামিনের চাহিদা পূরণ করে।

কিন্তু এক সূত্রে জানা গেছে জিংক ট্যাবলেট খেলে মোটা হওয়া যায়।এটি বলার কারণ হলো জিংক ট্যাবলেট খেলে খাবারের প্রতি রুচি বাড়ে। এর ফলে যে কেউ বেশি বেশি খাবার খেতে থাকে। এজন্য হয়তো সামান্য ওজন বাড়তে পারে অথবা মোটা হতে পারে। তাহলে বলা যায় জিংক বি ট্যাবলেট খেলে মোটা হওয়া যায় না বরং শরীরে ভিটামিন বি কমপ্লেক্স এর চাহিদা পূরণ করা যায়।
এই ট্যাবলেট খেলে হয়তো আপনার খাবারের প্রতি রুচি বাড়বে কিন্তু তেমন ওজন বাড়াতে সহায়তা করবে না। আশা করছি আপনারা ভালোভাবে বুঝতে পেরেছেন এই ট্যাবলেট মোটা হতে সাহায্য করে না। মোটা হওয়ার জন্য আপনারা বিভিন্ন ধরনের ট্যাবলেট খেতে পারেন যেগুলো ফার্মেসির দোকানে পেয়ে যাবেন। অবশ্যই সেগুলো ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী খেতে হবে।

জিংক বি ট্যাবলেট এর দাম কত

আপনারা হয়তো জিংক বি ট্যাবলেট এর দাম সম্পর্কে ভালোমতো জানেন না। তাদের জন্য আমরা আজকের এই অংশে জিংক বি ট্যাবলেট এর দাম কত এ সম্পর্কে আলোচনা করব। আপনারা বাজারে বিভিন্ন ধরনের ফার্মেসির দোকানে এই ট্যাবলেট গুলো পেয়ে যাবেন। তবে আপনাদের দাম গুলো জেনে রাখা অবশ্যক। প্রতি পিস জিংক বি ট্যাবলেট এর দাম ৩.৫০ টাকা।
আর ট্যাবলেটগুলো বক্স আকারে নিলে দাম ১০৫ টাকা। প্রতি বক্সে ৩০ টি করে ট্যাবলেট থাকে। আপনারা এই ট্যাবলেটগুলো কেনার আগে অবশ্যই ট্যাবলেট এর বক্সে গায়ে লেখা মেয়াদ ও উৎপাদন তারিখ দেখে কিনবেন। আর ট্যাবলেটগুলো ঠান্ডা ও শুষ্ক স্থানে রাখবেন এবং শিশুদের থেকে দূরে রাখবেন।

জিংক বি ট্যাবলেট খাওয়ার নিয়ম

জিংক বি ট্যাবলেট থেকে ভালো উপকারিতা ও কার্যকারিতা পেতে চাইলে অবশ্যই সঠিক নিয়ম অনুযায়ী গ্রহণ করতে হবে। আর সেজন্য আমরা আজকের এই পাঠে জিংক বি ট্যাবলেট খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করব। আপনারা যদি সঠিক নিয়মে জিংক বি ট্যাবলেট খেয়ে থাকেন তাহলে বিভিন্ন ধরনের উপকারিতা পাবেন। তবে আপনাদের সেই নিয়ম গুলো জানতে হবে। 
সাধারণত জিংক বি ট্যাবলেট দিনে ১টি করে তিনবার খেতে পারেন। আপনারা সকাল, বিকাল ও রাতে ১টি করে ট্যাবলেট খাবেন। আর অবশ্যই খাবার খাওয়ার পর ভরা পেটে জিঙ্ক ট্যাবলেট খেতে হবে। খালি পেটে কখনোই এ ধরনের ট্যাবলেট খাবেন না। আর মনে রাখবেন কোনো কারণ ছাড়া এ ধরনের ট্যাবলেট গ্রহণ করা উচিত নয় তাই ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী জিংক ট্যাবলেট গ্রহন করবেন। 

আপনার শরীর যদি ভিটামিনের ঘাটতি অথবা জিংকের অভাব দেখা দিয়ে থাকে তাহলে এ ধরনের ট্যাবলেট গুলো সেবন করতে পারেন। শরীরকে সুস্থ রাখতে ও রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে আপনারা প্রতিদিন নিয়ম অনুযায়ী জিংক বি ট্যাবলেট সেবন করতে পারেন। তাছাড়াও জিংক সিরাপ পাওয়া যায় যেটি আপনারা বাচ্চাদের খাওয়াতে পারেন। 
বাচ্চাদের বয়স অনুযায়ী এ ধরনের সিরাপ গুলো খাওয়াতে হয়। সেজন্য কতটুকু খাওয়াবেন সেটি জানার জন্য আপনারা চিকিৎসকের পরামর্শ নেবেন। এছাড়াও এই ট্যাবলেট গুলো গর্ভকালীন সময়ে মায়েরা সেবন করতে পারবেন। তবে এক্ষেত্রে ডাক্তারকে দেখিয়ে সেবন করতে হবে। আপনাদের অবশ্যই জিংক ট্যাবলেট খাওয়ার নিয়ম জানার পাশাপাশি জিংক ট্যাবলেট খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে জেনে রাখতে হবে যা আমরা একটু পরে আলোচনা করব।

জিংক ট্যাবলেট খাওয়ার উপকারিতা -  জিংক বি এর উপকারিতা

আমাদের মধ্যে অনেকে আছে যারা হয়তো জিংক ট্যাবলেট খাওয়ার উপকারিতা গুলো জানে না। তাদের জন্য আমরা এখন জিংক বি এর উপকারিতা সম্পর্কে আলোচনা করব। জিংক ট্যাবলেট আমাদের দেহের বিভিন্ন ধরনের উপকারিতা করে থাকে। সেই উপকারিতা গুলো আপনারা জানলে নিয়মিত সেবন করতে শুরু করবেন। তবে আর কথা না বাড়িয়ে জিংক ট্যাবলেট খাওয়ার উপকারিতা গুলো জেনে নেই।
  • দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। বিশেষ করে দেহের ইমিউন সিস্টেম উন্নত করতে ভালো কাজ করে থাকে
  • কোন ধরনের দীর্ঘস্থায়ী রোগ থাকলে তা সেরে যায়। তাই দীর্ঘস্থায়ী রোগ সমস্যা সমাধান করতে আপনারা জিংক ট্যাবলেট সেবন করতে পারেন।
  • পুরুষের প্রজনন ক্ষমতা ও তার যৌবন ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। যে সকল যুবকদের অথবা পুরুষদের যৌবন ক্ষমতা কমে গেছে তারা এ ধরনের ট্যাবলেট খেতে পারেন।
  • যাদের ডায়রিয়া অথবা বমি বমি ভাব বেশি দেখা যায় তাদের ক্ষেত্রে জিংক ট্যাবলেট খেলে ডায়রিয়া সেরে যায় এবং বমি ভাব দূর হয়।
  • দেহের পুষ্টি ঘাটতি পূরণ করে। বিশেষ করে জিংকের ঘাটতি ও ভিটামিন বি কমপ্লেক্সের ঘাটতি পূরণ করে থাকে।
  • ছেলেমেয়েদের চুল পড়া বন্ধ করে থাকে। চুল পড়া সমস্যা সমাধানে আপনারা  জিংক বি ট্যাবলেটগুলো গ্রহন করতে পারেন।
  • অনেক সময় আমার পড়াশোনায় অমনোযোগী হয়ে উঠি। সে ক্ষেত্রে  জিংক বি ট্যাবলেট গ্রহণ করলে পড়াশোনায় মনোযোগ বেড়ে যায়।
  • মুখের ব্রণ ধীরে ধীরে ঠিক হতে থাকে। ছেলেমেয়েরা ব্রণ দূর করতে এ ধরনের ট্যাবলেট গ্রহণ করতে পারেন।
  • তাছাড়াও জানা গেছে জিংক বি ট্যাবলেট ত্বকের সৌন্দর্য বৃদ্ধি পেতে সাহায্য করে।
  • আবার জিহ্বায় ঘা থাকলে তা সারাতে সাহায্য করে থাকে এই ট্যাবলেট।
  • দেহের কোন ক্ষত থাকলে তা নিরাময় করতে কাজ করে।
  • দেহে জিংক এর অভাব থাকলে তা পূরণ হয়।
  • মানসিক দুশ্চিন্তা বা অবসাদ কমে যায়।
  • যে কোন কাজে অমনোযোগী ভাব দূর হয়।
  • যাদের একজিমা রয়েছে তা ধীরে ধীরে সেরে যায়।
  • দেহে ছত্রাকজনিত রোগ প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে।
  • মায়েদের ক্ষেত্রে নবজাতক শিশুর বৃদ্ধি বিকাশ করে অর্থাৎ বামনত্ব বা অপরিপক্কতা দূর হয়।
  • ক্ষুধা জনিত সমস্যা দূর হয়ে যায় এবং খাবারের প্রতি রুচি বাড়াতে সাহায্য করে থাকে।
  • খাবারের ভালো স্বাদ পাওয়া যায়।
  • ঠান্ডা কাশি অর্থাৎ ঠান্ডা লাগলে তা সেরে যায়।
আপনারা তাহলে উপরে জিংক ট্যাবলেট খাওয়ার বিভিন্ন উপকারিতা গুলো সম্পর্কে জানতে পারলেন। তাছাড়াও আমরা ইতিমধ্যে  জিংক বি ট্যাবলেট খেলে কি মোটা হয় এ সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করে এসেছি। যদি আপনারা না জেনে থাকেন তাহলে উক্ত অংশটি ভালো করে পড়ে নিন।

জিংক বি কেন খায়

সাধারণত শরীরের জিংক এর অভাব দেখা দিলে জিংক বি খাওয়া হয়। তাছাড়াও বাচ্চাদের ক্ষেত্রে শারীরিক বৃদ্ধি ও মানসিক বৃদ্ধির জন্য জিংক বি খাওয়ানো হয়ে থাকে। খাবারে অরুচি কমাতে জিংক বি ট্যাবলেট খাওয়ায় থাকে। শিশুদের স্বাস্থ্য ভালো রাখার জন্য ডাক্তাররা প্রায় জিংক ট্যাবলেট প্রেসক্রিপশন করে থাকে। এজন্য আপনারা বুঝতেই পারছেন বাচ্চাদের স্বাস্থ্য ভালো রাখার জন্য এবং দৈহিক বৃদ্ধির জন্য জিংক অপরিহার্য। তাই আপনারা সচরাচর বাচ্চাদের জিঙ্ক যুক্ত খাবার খাওয়ার চেষ্টা করবেন। জিংক বি খেলে শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানো যায়।

জিংক এর অভাবজনিত রোগ - জিংক এর অভাবে কি হয়?

জিংকের অভাব হলে অনেক ধরনের রোগ হয়ে থাকে। আপনার অনেকেই এ সম্পর্কে ভালোমতো জানেন না। জিংক এর অভাবজনিত রোগ গুলো সম্পর্কে জানলে হয়তো আপনারা আগে থেকেই প্রতিরোধ ব্যবস্থা গড়ে তুলতে পারবেন। সে জন্য আপনাদের অবশ্যই জিংক এর অভাবজনিত রোগ সম্পর্কে জেনে রাখা উচিত যা আমরা আজকের এই অংশ আলোচনা করব। তবে চলুন কথা না বাড়িয়ে এবার জেনে নেই জিংক এর অভাবজনিত রোগ সম্পর্কে।
  • গর্ভবতী মায়েদের জিংক এর অভাব হলে বাচ্চার জন্মগত ত্রুটি হতে পারে।
  • মানবদেহে জিংক এর অভাব হলে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যেতে পারে।
  • এছাড়া জিংকের অভাব হলে স্মৃতিশক্তি কমে যাওয়া সম্ভাবনা রয়েছে।
  • আবার অনেকের ক্ষেত্রে চুল পাতলা হয়ে যেতে পারে। চুল পড়া সমস্যা দেখা দিতে পারে।
  • অনেক সময় দৃষ্টিশক্তিতে সমস্যা হতে পারে। এজন্য দৃষ্টি শক্তি ঠিক রাখতে জিংক গ্রহণ করুন।
  • তাছাড়া জানা গেছে জিংকের অভাব হলে দেহের হাড় দুর্বল হয়ে যেতে পারে।
  • পড়ালেখায় মনোযোগের ঘাটতি দেখা যেতে পারে।
  • মানসিক দুর্বলতা সৃষ্টি হতে পারে। এছাড়া মানসিক ক্লান্তি অনুভব হতে পারে।
  • ডায়রিয়া ও নিউমোনিয়া হতে পারে জিংকের অভাবে। তবে সবার ক্ষেত্রে ডায়রিয়া দেখা যায় না।
  • দেহের দৈহিক বৃদ্ধিতে বাধা প্রদান করতে পারে। শিশুদের ক্ষেত্রে জিংক এর অভাব হলে শারীরিক বৃদ্ধি কমে যেতে পারে।
  • ছেলে ও মেয়েদের মুখে ব্রণের সমস্যা দেখা দিতে পারে।
  • জিংক এর অভাবে দেহে অর্থাৎ মুখে ক্ষত সৃষ্টি হতে পারে। শরীরের বিভিন্ন স্থানে যেকোনো কারণে ক্ষত দেখা দিতে পারে।
  • এছাড়া প্রাপ্তবয়স্ক অর্থাৎ যুবকদের যৌবন ক্ষমতা কমে যেতে পারে।
  • ছত্রাক জনিত বিভিন্ন ধরনের সমস্যা হয়ে থাকতে পারে।
  • যেকোনো কাজে মনোযোগ বসাতে সমস্যা হয়। বিশেষ করে লেখাপড়ার ক্ষেত্রে এই সমস্যাটি বেশি হয়ে থাকে।
  • শারীরিক ও মানসিক অবসাদগ্রস্ত মনে হয়। শরীর সবসময়ই ক্লান্ত অনুভব করে এবং কোন কাজ করতে মন চায় না।
তাহলে আশা করছি আপনারা জিংক এর অভাবজনিত রোগ সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জানতে পেরেছেন। উক্ত রোগগুলো থেকে বাঁচতে হলে অবশ্যই শরীরে জিংকের চাহিদা পূরণ করতে হবে এজন্য আপনারা জিংক ট্যাবলেট অথবা জিংক যুক্ত খাবার গ্রহণ করতে পারেন।

জিংক ট্যাবলেট খেলে কি হয়

আমাদের দেহের ইমিউন সিস্টেমকে শক্তিশালী করার ক্ষেত্রে জিংক ট্যাবলেট অধিক কার্যকরী ভূমিকা পালন করে থাকে। গবেষণা দেখা গেছে নিয়মিত জিংক ট্যাবলেট খেলে সর্দি কাশি এবং প্রদাহ ও তীব্রতা কমাতে সাহায্য করে যা আমাদের সারা বছর সুস্থ রাখতে সহায়তা করে। আপনার ত্বকের সমস্যাকে বিদায় জানান কারণ এটি ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি করে এবং ত্বকের ক্ষত নিরাময় করতে সাহায্য করে থাকে।
জিংক ট্যাবলেট খেলে কি হয়
ফলে আপনার ত্বক হয় উজ্জ্বল ত্বক ও দাগ মুক্ত বর্ণ। এমন কি পড়াশোনা অমনোযোগী হলেও আপনারা জিংক ট্যাবলেট খেতে পারেন। বিশেষ করে আপনাদের মধ্যে যাদের শারীরিক সমস্যা রয়েছে এবং যৌবন ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে চান তারা জিংক ট্যাবলেট খেতে পারেন। তাহলে বুঝতেই পারছেন জিংক ট্যাবলেট খেলে কি হয়। আমরা শুধু এই অংশের সংক্ষিপ্ত আকারে আলোচনা করেছি। বিস্তারিত আপনারা পুরো পোস্টে জেনে যাবেন।

জিংক বি ট্যাবলেট এর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া

জিংক বি ট্যাবলেট খাওয়ার কিছু অপকারিতা ও পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া রয়েছে। জিংক ট্যাবলেট সঠিক নিয়মে না খাওয়ার কারণে অথবা অতিরিক্ত পরিমাণ খেলে কিছু পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া দেখা দিতে পারে। আর সেই পার্শ্ব প্রতিক্রিয়াগুলো সম্পর্কে আমরা এখন তুলে ধরবো। তবে চলুন আর কথা না বলে জিংক বি ট্যাবলেট এর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া গুলো জেনে নেওয়া যাক।
  • অনেকের পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া হিসেবে ঘন ঘন বমি হতে পারে। বমি ভাব অনুভব হয়ে থাকতে পারে।
  • পেটের বিভিন্ন ধরনের সমস্যা দেখা দিতে পারে। বিশেষ করে পেটব্যথা হয়ে থাকতে পারে।
  • তাছাড়াও অনেকের ক্ষেত্রে ডায়রিয়া সমস্যাটি দেখা দিতে পারে। তাই সঠিক নিয়মে গ্রহন করুন।
  • আবার মাথাব্যথা লক্ষণ অনেক ব্যক্তির ক্ষেত্রে দেখা দিয়ে থাকে।
  • এছাড়াও পাকস্থলী জনিত সমস্যা হতে পারে।
এজন্য আপনারা কোন কারন ছাড়া জিংক বি ট্যাবলেট গ্রহণ করবেন না। রেজিস্টার্ড ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী জিংক বি ট্যাবলেট সেবন করবেন। শুধুমাত্র আপনাদের শরীরে যদি ভিটামিনের ঘাটতি দেখা যায় তখনই জিংক বি ট্যাবলেট গ্রহণ করবেন।

বেবি জিংক ট্যাবলেট খাওয়ার নিয়ম

শিশুদের যদি বা বেবিদের যদি জিংকের অভাব হয়ে থাকে তাহলে তাদের জিংক ট্যাবলেট নিয়ম অনুযায়ী খাওয়াতে হবে। বেবিদের সাধারণত অপর্যাপ্ত পরিমাণ পুষ্টিকর খাদ্য ঘাটতি এবং শোষণের কারণে জিংকের অভাব হয়ে থাকে। এছাড়া শিশুদের ডায়রিয়া ও প্রোটিন ক্ষয়ের ফলে জিংক এর অতিরিক্ত ঘাটতি দেখা দেয়। বেবিদের স্বাস্থ্যের উন্নতি না হওয়া পর্যন্ত জিংক খাওয়াতে হবে।

বেবি অর্থাৎ শিশুর ওজন ১০ কেজির নিচে হলে ৫ মিলি বা এক চা চামচ দৈনিক দুইবার খাবারের পর খাওয়াতে হবে। আর বেবির বয়স ১০ থেকে ৩০ কেজি হয় তাহলে ১০ মিলি অর্থাৎ দুই চা চামচ দৈনিক খাবারের পরে খাওয়াতে পারেন। অবশ্যই খাবারের পর প্রতিদিন এক থেকে তিনবার খাওয়াবেন। 

কোন খাবারে জিংক পাওয়া যায়

বিভিন্ন ধরনের খাবারে জিঙ্ক পাওয়া যায়। যেগুলো আপনারা নিয়মিত খেলে শরীরের জিংকের অভাব পূরণ করতে পারবেন। এ ধরনের খাবার গুলো আপনারা প্রতিদিন খেতে পারেন। নিম্নে কিছু জিংক পাওয়া যায় এমন খাবারের তালিকা তুলে দেয়া হলোঃ
  • বাদাম
  • শাকসবজি
  • দুগ্ধজাতীয় খাবার
  • ওট
  • নানা ধরনের শস্য জাতীয় খাবার
  • রেডমিট
  • কাজু বাদাম
  • মাশরুম
  • মিষ্টি কুমড়ার বিচি
  • মুরগির মাংস
  • ডার্ক চকলেট
  • ডিম
  • মাংস
নিম্নে খাদ্যগুলো সম্পর্কে বর্ণনা করা হলো।

মাশরুমঃ মাশরুমে রয়েছে ভিটামিন সি ও আয়রন জাতীয় উপাদান। মাশরুমে সাধারণত ২২০ গ্রামের বেশি জিংক পাওয়া যায়।

দুগ্ধ জাতীয় খাবারঃ দুধ ও দইকে দুগ্ধজাত খাবার বলা হয়ে থাকে।দুগ্ধজাত খাবারে ক্যালসিয়ামের পাশাপাশি জিংকও উপস্থিত থাকে। ২৬০ মিলিলিটার দুধে ১.০৮ মিলিগ্রাম জিংক থাকে। তবে ৩০০ মিলিগ্রাম দইয়ে থাকে ৩.০০ মিলিগ্রাম জিংক।

র্ডাক চকলেটঃ এছাড়া ডার্ক চকলেটও জিংক রয়েছে। ডার্ক চকলেট যত গারো ডাক হবে ততো জিংকের পরিমাণ বেশি হবে। তবে ২০০ গ্রাম র্ডাক চকলেটে জিংক থাকে ৭.৭ মিলিগ্রাম। এছাড়া এটি আমাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে এবং দেহের রক্ত চলাচল নিয়ন্ত্রণ করতে সহায়তা করে থাকে।

শাকসবজিঃ তাছাড়াও শাকসবজি জাতীয় খাবারে জিঙ্ক পাওয়া যায়, যেমন লেগুম, ছোলা এবং মটরশুটি। এই সবজিগুলোতে ক্যালোরি, চর্বি, প্রোটিন এবং ফাইবার কম তবে ভালো পরিমাণে জিংক ক পাওয়া যায়। ২০০ গ্রাম ডালে ৮ মিলিগ্রাম পর্যন্ত জিঙ্ক থাকতে পারে।

জিংক বি ট্যাবলেট সম্পর্কে সাধারণ জিজ্ঞাসা (FAQ)

প্রশ্নঃওজন কমাতে কতটুকু জিংক খাওয়া উচিত?
উত্তরঃ আমাদের জানামতে সাধারণত ওজন কমাতে জিংক সাহায্য করতে পারে না। জিংক সাধারণত শরীর স্বাস্থ্য ভালো রাখতে ও রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করতে পারে। আপনারা ওজন কমাতে ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী জিংক খেতে পারেন।

প্রশ্নঃজিংক ট্যাবলেট খাওয়ার উপকারিতা কি?
উত্তরঃ জিংক ট্যাবলেট খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে আমরা ভালোভাবেই সম্পূর্ণ পোস্টে আলোচনা করেছি। তবুও বলছি জিংক ট্যাবলেট চুল পড়া রোধ , খাবারের প্রতি রুচি বাড়াতে সহ অনেক ধরনের উপকারিতা করে থাকে।

প্রশ্নঃজিংক বমি বমি ভাব কতদিন থাকে?
উত্তরঃ অত্যাধিক পরিমাণে জিংক যুক্ত খাবার অথবা জিংক ট্যাবলেট খেয়ে থাকলে তিন থেকে চার ঘন্টার মধ্যে বমি ভাব শুরু হতে থাকে এবং ডায়রিয়া পর্যন্ত হতে পারে। আর এই সমস্যাগুলো সাধারণত দুই থেকে তিন দিন স্থায়ী থাকতে পারে।

প্রশ্নঃভিটামিন সি ও জিংক খেলে কি ওজন বাড়ে?
উত্তরঃ জিংক যেহেতু ওজন বৃদ্ধির ঔষধ নয় সেহেতু জিংক খেলে ওজন বাড়ে না। তাছাড়াও ভিটামিন সি খেলেও ওজন বাড়ানো সম্ভব নয় বরং ভিটামিন সি খেলে ওজন কমানো যায়।

প্রশ্নঃপুরুষদের জন্য জিংক এর কাজ কি?
উত্তরঃ পুরুষদের যৌবন ক্ষমতা বাড়াতেও দেহের টেস্টোস্টেরন হরমোনের মাত্রা ঠিক রাখতে জিংক সহায়তা করে থাকে।

লেখক এর মন্তব্য

আশা করছি প্রিয় বন্ধুরা এই সম্পূর্ণ পোস্টে  জিংক বি ট্যাবলেট খেলে কি মোটা হয় এ সম্পর্কিত বিস্তারিত তথ্য জেনে গেছেন। তাছাড়াও জিংক ট্যাবলেট খাওয়ার উপকারিতা সহ এর দাম সম্পর্কেও আলোচনা করা হয়েছে আজকের এই পোস্টে। মূলত আর্টিকেলটিতে জিংক ট্যাবলেট সম্পর্কিত সকল কিছু আলোচনা করা হয়েছে যার ফলে আপনারা ভালোভাবেই জিংক ট্যাবলেট সম্পর্কে ধারণা পেয়ে গেছেন। এখন শুধু আপনাকে সঠিক নিয়ম মেনে ট্যাবলেট গুলো খেতে হবে। আপনার বন্ধুদের বা পরিচিতদের  জিংক বি ট্যাবলেট খেলে কি মোটা হয় এ সম্পর্কে জানাতে পোস্টটি শেয়ার করতে পারেন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি বিডির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url

বিজ্ঞাপন