টাইগার মুরগির ভ্যাকসিন তালিকা ও টাইগার মুরগির খাবার তালিকা জানুন

প্রিয় বন্ধুরা, আপনারা কি মুরগি পালন করতে চান। আপনাদের মধ্যে অনেকেই টাইগার মুরগী পালন করতে চান। তবে এ ক্ষেত্রে অনেকেই টাইগার মুরগির ভ্যাকসিন তালিকা ও খাদ্য তালিকা সম্পর্কে জানেনা। মুরগিকে সুস্থ সবল ও রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা সম্পন্ন রাখতে ভ্যাকসিন ও খাদ্য দেওয়া প্রয়োজন। তাই আজকের পোস্টটিতে আমরা আপনাদের জন্য টাইগার মুরগির ভ্যাকসিন তালিকা ও টাইগার মুরগির খাবার তালিকা সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা তুলে ধরার চেষ্টা করব।
টাইগার মুরগির ভ্যাকসিন তালিকা - টাইগার মুরগির খাবার তালিকা
প্রিয় পাঠক আপনি যদি টাইগার মুরগি লালন পালন করে লাভবান হতে চান তাহলে অবশ্যই আপনাকে টাইগার মুরগির খাদ্য তালিকা ও টাইগার মুরগির ভ্যাকসিন তালিকা সম্পর্কে বিস্তারিত জ্ঞান রাখা প্রয়োজন। যা আমরা এই পোস্টে গুরুত্ব সহকারে আলোচনা করব।
পোস্টসূচনাঃ

উপস্থাপনা

বর্তমানে আমাদের দেশে বিশেষ করে গ্রামগুলোতে টাইগার মুরগি পালনের চাহিদা বেড়ে চলছে। কারণ এই মুরগি মাংস ও ডিম পাড়ার জন্য বিখ্যাত এবং অনেক জনপ্রিয়। যার ফলে কম-বেশি সকল কৃষকেরা টাইগার মুরগী পালন করে আসছে। এটি বাণিজ্যকভাবে পালন করে কৃষকেরা অনেক লাভবান হচ্ছে। কারণ টাইগার মুরগি ওজনে বেশি হয়ে থাকে। অর্থাৎ টাইগার মুরগির সাধারণত মাংসের জন্য বিখ্যাত। এই মুরগি পালন করে অতি সহজেই লাভবান হওয়া যায়। 

তাইতো আমাদের দেশে কৃষকেরা লাভজনক ব্যবসা হিসেবে টাইগার মুরগির খামার গড়ে তুলছে। তবে টাইগার মুরগী খামার গড়ে তোলার পূর্বে আপনাকে অবশ্যই টাইগার মুরগির সম্পর্কে জানতে হবে এবং টাইগার মুরগি কি কি খাবার খায় অর্থাৎ টাইগার মুরগির খাবার তালিকা ও টাইগার মুরগির ভ্যাকসিন তালিকা সম্পর্কিত জ্ঞান রাখতে হবে। তাহলে আপনি একমাত্র টাইগার মুরগী পালন করে লাভজনক ব্যবসা হিসেবে অর্থ উপার্জন করতে পারবেন। আজ আমরা এই পোস্টে টাইগার মুরগির ভ্যাকসিন তালিকা ও খাদ্য তালিকা গুলো সম্পর্কে আলোচনা করব।

টাইগার মুরগি কি

বর্তমানে টাইগার মুরগী একটি খুবই জনপ্রিয় মুরগি। মুরগি ব্যবসায়ীরা এই মুরগিকে মাংস ও ডিম পাড়ার জন্য লালন পালন করে থাকে। আর এই মুরগি মাংসের জন্য অধিক জনপ্রিয়। টাইগার মুরগী সাধারণত বছরের প্রায়ই ২০০ থেকে ৩০০ টি ডিম দিয়ে থাকে। জানা গেছে এই মুরগিকে ভালোভাবে লালন পালন করলে অর্থাৎ পুষ্টিকর খাবার খাওয়ালে এই মুরগি সাধারণত ৭ থেকে ৮ কেজি পর্যন্ত হয়ে থাকে। তাছাড়া ওই মুরগি পালনের বিষয়ে সুযোগ-সুবিধা রয়েছে যার ফলে আপনারা অতি সহজেই এই মুরগি পালন করে লাভবান হতে পারবেন। চলুন এই টাইগার মুরগী সম্পর্কে তা আরও বিস্তারিত তথ্য জেনে আসি।

টাইগার মুরগির ভ্যাকসিন তালিকা

প্রিয় কৃষক ভাইয়েরা আপনারা যদি টাইগার মুরগী পালন করে ভালো অর্থ উপার্জন করতে চান তাহলে অবশ্যই আপনাকে টাইগার মুরগিকে খাবারের সাথে সাথে নিয়মিত ভ্যাকসিন দিতে হবে। তার জন্য আপনাদের অবশ্যই টাইগার মুরগির ভ্যাকসিন তালিকা ও টাইগার মুরগির ঔষধের তালিকা জানতে হবে। 
টাইগার মুরগিকে রোগমুক্ত রাখতে অবশ্যই নিয়মিত ভ্যাকসিন প্রয়োগ করতে হবে। তা না হলে মুরগির যথাসময়ে বেড়ে উঠবে না বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হবে এর ফলে মুরগি মারা পর্যন্ত যেতে পারে। তাই সঠিক নিয়মে সঠিক সময়ে ভ্যাকসিন প্রয়োগ করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। চলুন আর কথা না বাড়িয়ে আমরা এবার জেনে নেই টাইগার মুরগির ভ্যাকসিন তালিকা কি কি সম্পর্কে।
  • (বয়স ১-৩ দিন) হলে ভ্যাকসিন (আইবি+ এনডি)
  • (বয়স ৭-৯ দিন) হলে ভ্যাকসিন (আই বি ডি)
  • (বয়স ১৬-১৭ দিন) হলে ভ্যাকসিন (ল্যাসোটা)
  • (বয়স ১৮-২০ দিন) হলে ভ্যাকসিন(আই বি ডি)
  • (বয়স ২৪-২৮ দিন) হলে ভ্যাকসিন(এভিয়ান ইনফ্লুয়েঞ্জা )
  • (বয়স ৩০-৩৫ দিন) হলে ভ্যাকসিন(ফাউল পক্স)
  • (বয়স ৬-৭ সপ্তাহ) ভ্যাকসিন(এনডি)
  • (বয়স ৮ সপ্তাহ) হলে ভ্যাকসিন(ফাউল কলেরা)
  • (বয়স ১২ সপ্তাহ) হলে ভ্যাকসিন(ফাউল কলেরা)
  • (বয়স ১৫-১৬ সপ্তাহ) হলে ভ্যাকসিন(এভিয়ান ইনফ্লুয়েঞ্জা (H5N1)
আশা করছি আপনারা উপরের টাইগার মুরগির ভ্যাকসিন তালিকা গুলো ভালোভাবে জেনে গেলেন এর জন্য অবশ্যই আপনাকে সঠিক নিয়মে ভ্যাকসিনগুলো দিতে হবে। অবশ্যই একটা কথা মনে রাখবেন টাইগার মুরগির ভ্যাকসিন দেওয়ার আগে অবশ্যই একজন ভেটেনারি চিকিৎসকের নিকট পরামর্শ নিয়ে ভ্যাকসিন গুলো প্রদান করবেন অথবা  অভিজ্ঞ পশুপাখি ভ্যানেটারি ডাক্তারের কাছ থেকে ভ্যাকসিন দিয়ে নিবেন।

টাইগার মুরগির ঔষধের তালিকা

প্রিয় কৃষক ভাইয়েরা আপনারা যদি টাইগার মুরগির বাচ্চা উৎপাদন করতে চান তাহলে আপনাকে কিছু নিয়ম মেনে ওষুধ ব্যবহার করতে হবে। টাইগার মুরগির বাচ্চাকে সুস্থ রাখতে টাইগার মুরগির ঔষধের তালিকা জানতে হবে। চলুন আমরা টাইগার মুরগির ঔষধের তালিকায় এবার বিস্তারিত জেনে নেই।
  • প্রথমেই এই মুরগিগুলোকে আপনি প্রথম দিনে lisovet ২ মিলি ১ লিটার পানিতে মিশিয়ে মুরগিকে পানির সাথে খেতে দিতে হবে।
  • এরপর আপনাকে মুরগিগুলোকে আবার সকালের দিকে Amoxicol care ও Cosmixplus এই ওষুধগুলো নিয়ে ১ লিটার পানিতে মিশিয়ে টাইগার মুরগিকে খেতে দিতে হবে।
  • এরপর পরের ৭-১০ দিন পর্যন্ত টাইগার মুরগিকে  Oravita 1gm- 3ml এক লিটার পানিতে মিশিয়ে খাওয়াতে হবে।
এভাবে আপনারা ঔষধ গুলো খাওয়াতে পারেন। তবে সবচেয়ে ভালো হয় একজন পশুপাখির চিকিৎসকের নিকট গিয়ে সঠিক ঔষধের নাম জেনে আসা। তাছাড়া আপনি কৃষি অধিদপ্তরে গিয়ে তাদের কাছ থেকে টাইগার মুরগির ঔষধের তালিকা সম্পর্কে জানতে পারবেন এবং তাদের কাছ থেকে নিতে পারবেন। চলুন আমরা এখন টাইগার মুরগির স্বাস্থ্য ভালো রাখার জন্য এবং বৃদ্ধির জন্য টাইগার মুরগির খাবার তালিকা সম্পর্কে আলোচনা করি।

টাইগার মুরগির খাবার তালিকা ।টাইগার মুরগির খাদ্য তালিকা

আমরা এখন আপনাদের জন্য মূল পর্যায়ে চলে এসেছি। এখানে আমরা এখন আপনাদের জন্য টাইগার মুরগিকে কি কি খাবার দিবেন এবং কিভাবে খাবার দিবেন সে সম্পর্কে আলোচনা করব। চলুন আর কথা না বাড়িয়ে এবার জেনে নেই টাইগার মুরগির খাদ্য তালিকা সম্পর্কে।
  • টাইগার মুরগির বাচ্চার জন্মের পর, 0 তম দিনে, টাইগার মুরগির বাচ্চার ওজন সাধারণত ৪৫ থেকে ৫০ গ্রামের মধ্যে হয়। 0 তম দিনে, শরীরের বৃদ্ধি 0 এবং গড় উচ্চতা 0। তবে এ দিনে, খাদ্যর অনুপাত 0 এবং টাইগার মুরগির বাচ্চা খাদ্যের পরিমাণও শূন্য হবে।
  • প্রথম দিনে টাইগার মুরগির বয়স অনুযায়ী ওজন হবে ৫৭ গ্রাম এর মতো। যার ফলে টাইগার মুরগির বৃদ্ধি হবে ১৫ গ্রাম ও ০ হবে দৈনিক গড় বৃদ্ধি। এজন্য মুরগি অবশ্যই দৈনিক ১৪ গ্রাম খাদ্য গ্রহণ করবে। এ কারণে প্রথম দিন টাইগার মুরগির খাদ্য পরিমান হবে চৌদ্দগ্রাম।
  • দ্বিতীয় দিনের ক্ষেত্রে বয়স অনুযায়ী তাদের ওজন হবে ৭২ গ্রাম। তাছাড়া ওজন বাড়বে ১৫ গ্রামের মতো। তাহলে এক্ষেত্রে দ্বিতীয় দিনের ক্ষেত্রে খাদ্যের পরিমাণের হার হয়ে দাঁড়ায় ০ শতাংশ। তাহলে দ্বিতীয় দিনে খাবার দিতে হবে ৩০ গ্রাম।
  • টাইগার মুরগির বাচ্চার ক্ষেত্রে তৃতীয় দিনে তার ওজন হবে ৮৯ গ্রাম। অর্থাৎ তাদের ওজনে বৃদ্ধির হার হচ্ছে দৈনিক ১৭% করে। তাহলে তৃতীয় দিনে টাইগার মুরগির বাচ্চার খাবার গ্রহণের পরিমাণ হবে ৫১ গ্রাম। অর্থাৎ ৫১ গ্রাম টাইগার মুরগিকে খাবার দিতে হবে তৃতীয় দিনে।
  • এক্ষেত্রে চতুর্থ দিনে টাইগার মুরগির বাচ্চার বয়স অনুযায়ী ওজন হবে ১১০ গ্রাম।এক্ষেত্রে সাধারণত খাবারের দৈনিক গড় বৃদ্ধি হবে ২০ গ্রাম করে। তাহলে এক্ষেত্রে চতুর্থ দিনে টাইগার মুরগির বাচ্চা খাবার গ্রহণ করবে ৭৫ গ্রাম।
  • এবার বয়স অনুযায়ী পঞ্চম দিনে টাইগার মুরগির বাচ্চা এর ওজন হবে ১৩২ গ্রাম। এক্ষেত্রে খাদ্য বৃদ্ধির হার হবে ২৫ গ্রাম করে। তাহলে পঞ্চম দিনের টাইগার মুরগির বাচ্চা খাবার গ্রহণ করবে ১০৫ গ্রাম করে।
  • তবে ষষ্ঠ দিনের মাথায় টাইগার মুরগির ওজন হবে ১৬০ গ্রাম। তাহলে এক্ষেত্রে ৩০ গ্রাম খাদ্যের পরিমাণ বেড়ে যায়। তাহলে ষষ্ঠ দিনে আপনারা খাবার দিবেন তাইলে টাইগার মুরগির বাচ্চার জন্য ১৩৫ গ্রাম। অর্থাৎ টাইগার মুরগির বাচ্চা ষষ্ঠ দিনে খাবার গ্রহণ করবে ১৩৫ গ্রাম।
  • আর সপ্তম দিনের মাথায় এই টাইগার মুরগির বাচ্চার ওজন হয়ে থাকবে ১৮৫ গ্রাম। তাহলে এক্ষেত্রে প্রতিদিনের জন্য খাদ্য বৃদ্ধির হার হয়ে দাঁড়ায় ৩০ গ্রাম করে। এই সপ্তম দিনে এসে টাইগার মুরগির বাচ্চাগুলো সাধারণত বৃদ্ধি হতে থাকবে তাই এদের খাবারের পরিমাণও বৃদ্ধি পেতে থাকবে। তাহলে এক্ষেত্রে ৭ম দিনে টাইগার মুরগির বাচ্চা খাবার গ্রহণ করবে ১৬৭ গ্রাম।
আশা করছি আপনারা টাইগার মুরগির খাবার তালিকা ও খাদ্য তালিকা ভালোভাবে বিস্তারিত জেনে গেছেন। অবশ্য আপনারা এই খাদ্য তালিকা গুলো বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান অথবা সরকারি কৃষি অধিদপ্তরে পেয়ে যাবেন পোস্টার আকারে। খাবারগুলো দেওয়ার আগে অবশ্যই একজন ভালো কৃষি অধিদপ্তর অথবা মুরগি পালন বিশেষজ্ঞ এর কাছ থেকে পরামর্শ নিবেন।

টাইগার মুরগির বাচ্চার দাম

আপনারা কি টাইগার মুরগি পালন করে ব্যবসা করতে চান তাহলে অবশ্যই টাইগার মুরগির বাচ্চা কিনতে হবে। আর সেজন্য আপনাদের টাইগার মুরগির বাচ্চার দাম জানা প্রয়োজন। এর ফলে অতি সহজেই আপনারা টাইগার মুরগির দাম জেনে সঠিকভাবে টাইগার মুরগির বাচ্চা কিনতে পারবেন। আর এই সম্পর্কে আমরা আজকের এই অংশ আলোচনা করব টাইগার মুরগির বাচ্চা দাম কত। চলুন জেনে আসি।
টাইগার মুরগির বাচ্চার দাম সাধারণত ৪০ থেকে ৫০ টাকার মধ্যে হয়ে থাকে। তবে বিভিন্ন বয়সের টাইগার মুরগির দাম বিভিন্ন রকম হয়ে থাকে। আবার অনেক সময় মুরগির বাচ্চার দাম ওঠা নামা করে থাকে। এক্ষেত্রে আপনাকে বাজারে গিয়ে দাম জেনে আসতে হবে। তবে তেমন পার্থক্য দেখা যায় না। আমাদের জানামতে একদিন বয়সী টাইগার মুরগির বাচ্চার দাম সাধারণত ৩০ থেকে ৪০ টাকা। 

আর টাইগার মুরগির বাচ্চার বয়স ৮ থেকে ১০ দিন হলে এর দাম ৫০ থেকে ৬০ টাকা হয়ে থাকে। তবে আরেকটি রয়েছে সেটি হল টাইগার মুরগির বাচ্চা বয়স যখন তিন সপ্তাহ তখন সেই বাচ্চাগুলোর দাম প্রায় ৯০ থেকে ১০০ টাকার উপরে হয়ে থাকে। তবে আনুমানিক গড়ে সাধারণত টাইগার মুরগির বাচ্চার দাম ৪০ থেকে ৫০ টাকার মধ্যে হয়ে থাকে। তাহলে আশা করছি আপনারা মুরগির বাচ্চার দাম গুলো জেনে গেলেন।

টাইগার মুরগির বৈশিষ্ট্য

আপনারা যদি টাইগার মুরগি পালন করতে চান তাহলে অবশ্যই টাইগার মুরগির বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে জেনে রাখা ভালো। চলুন আমরা কিছু টাইগার মুরগির বৈশিষ্ট্য জেনে আসি।
  • সাধারণত টাইগার মুরগির মোরগ এর ওজন হয়ে থাকে ৭ থেকে ৮ কেজি। আর টাইগার মুরগির ওজন হয়ে থাকে ৫ থেকে ৬ কেজি এর মত ।তবে কিছু কিছু ক্ষেত্রে চার থেকে পাঁচ কেজি হয়ে থাকে। যদি আপনি পুষ্টিকর খাবার দেন তাহলে সঠিক ওজন পাওয়া সম্ভব।
  • আপনারা অতি সহজেই টাইগার মুরগির বয়স দুই থেকে আড়াই মাস হলেই বিক্রি করতে পারবেন।
  • টাইগার মুরগির সাধারণত ১৫০ থেকে ১৮০ গ্রাম খাবার খেয়ে থাকে প্রতিদিন।
  • এছাড়াও টাইগার মুরগি সাধারণত বছরে প্রায় ২০০ থেকে ২৫০টির মতো ডিম দিয়ে থাকে।
  • টাইগার মুরগির গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য হলো এই মুরগিগুলো ৫ মাসের মধ্যে ডিম দিতে শুরু করে। তবে অনেক ক্ষেত্রে ওজনের ওপর নির্ভর করে ডিম দিয়ে থাকে। তাই সঠিক ওজন থাকলে তাড়াতাড়ি ডিম দেয়।
  • এই মুরগি দুই বছর থেকে শুরু করে আড়াই বছর পর্যন্ত ডিম দিতে পারে। এরপর থেকে এর ডিম দেওয়ার ক্ষমতা আস্তে আস্তে কমতে থাকে।
  • আর টাইগার মুরগি সাধারণত অতি সহজেই লালন পালন করা যায় খামারে।

টাইগার মুরগি পালন পদ্ধতি - টাইগার মুরগি পালনের সুবিধা

চলুন আমরা এখন টাইগার মুরগি পালন পদ্ধতি ও টাইগার মুরগি পালনের সুবিধা গুলো জেনে আসি। তাহলে আপনার অতি সহজে বুঝতে পারবেন টাইগার মুরগি কি কি সুবিধা দিয়ে থাকে। আর এটি পালন করে কতটা সহজ।
  • টাইগার মুরগির সাধারণত রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বেশি অন্যান্য মুরগী থেকে এবং রোগ কম হয়।
  • তাছাড়া টাইগার মুরগি মাংসের জন্য জনপ্রিয়। এই মুরগির সাধারণত ৭ থেকে ৮ কেজি পর্যন্ত হতে পারে।
  • এছাড়াও মুরগি বছরের প্রায় ২০০ থেকে ২৫০টির মতো ডিম দিতে পারে।
  • এ মুরগির খাবার খরচ তুলনামূলক অন্যান্য মুরগী থেকে কম। এবং খুব দ্রুত বৃদ্ধি পায়।
  • তাছাড়াও টাইগার মুরগি দেখতে আকর্ষণীয় এবং বড় আকারের হয়ে থাকে যার ফলে অতি সহজেই কম সময়ে টাইগার মুরগী বিক্রি করা যায়।
  • আর টাইগার মুরগী থেকে আপনি বাচ্চা উৎপাদন করে ব্যবসা করতে চান তাহলে ভালো লাভবান হওয়া যাবে। এভাবে আপনি বাচ্চা থেকে টাইগার মুরগী থেকে লাভবান হতে পারবেন।
  • টাইগার মুরগির ওজন সাধারণত দ্রুত বৃদ্ধি পায় এর ফলে কম সময়ে অর্থ উপার্জন করা যায়।
  • এই মুরগি সাধারণত ৫ থেকে ৬ মাস বয়স থেকে ডিম দেওয়া শুরু করে এবং ভালো পরিমাণ ডিম দেয়।
  • এছাড়াও টাইগার মুরগির রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম হয় তেমনভাবে ভ্যাকসিন বেশি দেওয়ার প্রয়োজন পড়ে না।
আশা করছি আপনারা টাইগার মুরগী পালনের সুবিধা গুলো জানতে পেরেছেন এর ফলে আপনারা অতি সহজেই টাইগার মুরগির খামার করে লাভবান হতে পারবেন।

টাইগার মুরগি কত মাস বয়সে ডিম পাড়ে

প্রিয় কৃষক ভাইয়েরা আপনারা হয়তো অনেকেই টাইগার মুরগি কত মাস বয়সে ডিম পাড়ে এ সম্পর্কে জানেন না। তাদের জন্য আমরা টাইগার মুরগি কত মাস বয়সে ডিম পাড়ে এ সম্পর্কে জানার চেষ্টা করব। টাইগার মুরগির বয়স সাধারণত ৫ মাস অথবা ২০ সপ্তাহ হলে এরা ডিম দেওয়া শুরু করে। 

এছাড়াও টাইমের মুরগি বছরের প্রায় ২০০ থেকে ২৫০ ২৫০টির মতো ডিম দিতে পারে। তবে আস্তে আস্তে ডিম দেওয়ার ক্ষমতা কমা শুরু করলে তখন তারা ডিম দেয় ১৮০ থেকে ২০০ টির মত। আর এই মুরগি সাধারণত দুই থেকে আড়াই বছর পর্যন্ত অনায়াসেই ভালোভাবে ডিম দিয়ে আসতে পারে। তবে এরপর থেকে ডিম দেওয়ার ক্ষমতা কমতে থাকে।

টাইগার মুরগি চেনার উপায় - টাইগার মুরগির বাচ্চা চেনার উপায়

আপনারা যদি টাইগার মুরগির ব্যবসা করতে চান তাহলে অবশ্যই আপনাকে টাইগার মুরগি চিনতে হবে। আর এজন্য টাইগার মুরগি চেনার উপায় সম্পর্কে জানতে হবে যা আমরা এই অংশে গুরুত্ব সহকারে আলোচনা করব। চলুন জেনে নেই টাইগার মুরগি চেনার উপায় কি।
  • টাইগার মুরগির সাধারণত অন্যান্য মুরগি থেকে আকারে বড় হয়ে থাকে এবং তাদের পা অনেক শক্ত হয়ে থাকে।
  • তাছাড়া আগে মুরগি পা মোটা এবং চোখগুলো বড় বড় হয়ে থাকে। তাদের চোখের দিকে খেয়াল রাখুন।
  • তাছাড়াও টাইগার মুরগী লাল , কালো , ধূসর , বিভিন্ন কালার মিক্স ইত্যাদি রঙের হয়ে থাকে।
  • তবে আপনারা যারা টাইগার মুরগি লালন পালন করবেন তারা অবশ্যই খামার থেকে টাইগার মুরগির বাচ্চা সংগ্রহ করবেন।
  • তাছাড়া আপনারা টাইগার মুরগির বাচ্চা নিতে চাইলে অবশ্যই টাইগার মুরগির বাচ্চা শরীরের দিকে খেয়াল রাখবেন। বাচ্চার শরীর সাধারণত মোটা হয়ে থাকে অন্যান্য মুরগী থেকে এবং আলাদা হয় দেখতে। এসব বাচ্চার শরীর গোলাকার হয়ে থাকে।
  • এছাড়াও টাইগার মুরগির বাচ্চার মাথাগুলো টাইগার মুরগির মত বড় হয়ে থাকে। তাই বাচ্চার মাথার দিকে খেয়াল রাখুন এগুলা কিছুটা বড় এবং অন্যান্য মুরগি থেকে আলাদা হয়ে থাকে।
আশা করছি আপনারা কিছু টাইগার মুরগি চেনার উপায় ও টাইগার মুরগির বাচ্চা চেনার উপায় জানতে পারলেন। এর ফলে আপনারা অতি সহজেই অরজিনাল টাইগার মুরগি চিনে কিনতে পারবেন এবং পালন করতে পারবেন।

টাইগার মুরগী নিয়ে সাধারণ জ্ঞান এবং প্রশ্ন ও উত্তর FAQ

প্রশ্নঃ কত বছর টাইগার মুরগি ডিম পাড়ে?
উত্তরঃ টাইগার মুরগী সাধারণত দুই থেকে আড়াই বছর পর্যন্ত টানা ডিম দিতে থাকে।

প্রশ্নঃ টাইগার মুরগি পালন করতে কতটা জায়গা লাগে?
উত্তরঃ টাইগার মুরগী পালন করতে আমাদের জানামতে প্রায় দুই বর্গফুট জায়গা লাগে। তবে আপনি এক্ষেত্রে খামারের জায়গায় পরিমাণ বাড়াতে পারেন।

প্রশ্নঃ টাইগার মুরগির ওজন কেমন হয়?
উত্তরঃ টাইগার মুরগির ওজন সাধারণত ৭ থেকে ৮ কেজি হয়ে থাকে।

প্রশ্নঃ টাইগার মুরগি কত বছর বয়সে ডিম দেওয়া শুরু করে?
উত্তরঃ টাইগার মুরগি সাধারণত ৫ থেকে ৬ মাস বয়স থেকে ডিম দেওয়া শুরু করে। তবে অনেক সময় পুষ্টিকর প্রোটিন জাতীয় খাবার গ্রহণ করলে পাঁচ মাসের আগেই ডিম দেওয়া শুরু করে।

শেষ কথা

আশা করছি প্রিয় পাঠক আপনারা হয়তো এতক্ষণে টাইগার মুরগির ভ্যাকসিন তালিকা ও টাইগার মুরগির খাবার তালিকা সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জানতে পেরে গেছেন। আপনি যদি টাইগার মুরগী থেকে সফলতা অর্জন করতে চান তাহলে অবশ্যই সঠিক নিয়মে খাবার খাওয়াতে হবে এবং খাবারের তালিকা অনুযায়ী ও বয়স অনুযায়ী খাবার খাওয়াতে হবে। 

এছাড়াও টাইগার মুরগিকে সুস্থ রাখতে নিয়মিত ভ্যাকসিন প্রদান করতে হবে। আশা করছি আপনারা ভালোভাবে বুঝতে পেরেছেন। টাইগার মুরগী পালন নিয়ে অন্য জনকে উৎসাহিত করতে আমাদের পোস্টটি শেয়ার করুন এবং টাইগার মুরগি পালন করে লাভবান হন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি বিডির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url